৬ দফা গুলো কি কি | ছয় দফা মনে রাখার কৌশল

৬ দফা গুলো কি কি: সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্। আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম Bongotutor.com ভিজিট করার জন্য। আজকের এই আর্টিকেল পড়ে আপনি জানতে পারবেন ৬ দফা গুলো কি কি তা সম্পর্কে। এছাড়া আপনি আরও জানতে পারবেন ছয় দফা মনে রাখার কৌশল সম্পর্কে।

৬ দফা গুলো কি কি | ছয় দফা মনে রাখার কৌশল
ছয় দফা আন্দোলন ছিল একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক আন্দোলন যা ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত হয়েছিল, যা বর্তমানে বাংলাদেশ নামে পরিচিত। 

ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা, কারণ এটি ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করেছিল।

ছয় দফা দাবি সমূহ কি কি

ছয় দফার দাবিসমূহ হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো:

  • ১. শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি
  • ২. কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা
  • ৩. মুদ্রা বা অর্থ - সম্বন্ধীয় ক্ষমতা
  • ৪. রাজস্ব, কর বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতা
  • ৫. বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা
  • ৬. আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা

ছয় দফা মনে রাখার কৌশল

ছয় দফা মনে রাখার টেকনিক: শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাবলে মুদ্রা, রাজস্ব, বৈদেশিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজন। 

কৌশলের ব্যাখ্যা:

১. শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য = শাসনতান্ত্রিক কাঠামো ও রাষ্ট্রের প্রকৃতি

২. কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতাবলে = কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা

৩. মুদ্রা = মুদ্রা বা অর্থ-সম্বন্ধীয় ক্ষমতা

৪. রাজস্ব = রাজস্ব, কর বা শুল্ক সম্বন্ধীয় ক্ষমতা

৫. বৈদেশিক বাণিজ্য = বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক ক্ষমতা

৬. আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের = আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা

৬ দফা গুলো কি কি

ছয় দফার দাবিসমূহ ব্যাখ্যা সহকারে নিচে নির্ভুলভাবে তুলে ধরা হলো:

  • স্বায়ত্তশাসন: ছয় দফা আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবি করেছিল, যা তখন পাকিস্তানের একটি অংশ ছিল। আন্দোলনটি দুটি স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য, একটি পূর্বে এবং অন্যটি পশ্চিমে একটি ফেডারেল সরকার গঠনের আহ্বান জানায়।
  • ভাষা: আন্দোলনে উর্দুর সমান বাংলাকে পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। আন্দোলনের যুক্তি ছিল যে বাংলা, পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার দ্বারা কথ্য ভাষা, পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী দ্বারা দমন করা হচ্ছে।
  • ফেডারেলিজম: আন্দোলনটি একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থার আহ্বান জানায় যা পাকিস্তানের প্রদেশগুলোকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করবে। আন্দোলনের যুক্তি ছিল যে পশ্চিম পাকিস্তানে একটি কেন্দ্রীভূত সরকার পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করছে।
  • রাজস্ব: ছয় দফা আন্দোলনের দাবি ছিল যে কর এবং রাজস্ব সহ প্রদেশগুলোর নিজস্ব সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। আন্দোলনের যুক্তি ছিল যে পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার অন্যায়ভাবে পূর্ব পাকিস্তানের সম্পদ শোষণ করছে।
  • প্রতিরক্ষা: আন্দোলনের দাবি ছিল যে পূর্ব পাকিস্তানের সীমানা রক্ষার জন্য নিজস্ব সামরিক বাহিনী থাকা উচিত। আন্দোলনের যুক্তি ছিল যে পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা চাহিদাকে অবহেলা করছে।
  • বৈদেশিক সম্পর্ক: আন্দোলনের দাবি ছিল যে পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব বৈদেশিক নীতি পরিচালনার অধিকার থাকা উচিত। আন্দোলনের যুক্তি ছিল যে পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার একটি পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করছে যা পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থে নয়।

ছয় দফা আন্দোলনের উদ্দেশ্য

  • পাকিস্তানের সংবিধান ফেডারেল হওয়া উচিত এবং প্রদেশগুলির স্বায়ত্তশাসনের বৃহত্তর ডিগ্রি থাকা উচিত।
  • দেশের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক দায়ভার শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারেরই থাকা উচিত।
  • প্রতিটি প্রদেশের তার কর ধার্য ও আদায়ের অধিকার থাকতে হবে।
  • ফেডারেল সরকারের তাদের সম্মতি ছাড়া প্রদেশের উপর কোনো কর আরোপের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়।
  • পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব মুদ্রা থাকা উচিত।
  • পূর্ব পাকিস্তানে সংগৃহীত রাজস্ব পূর্ব পাকিস্তানেই থাকতে হবে।

ছয় দফা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা, একটি রাজনৈতিক দল যা ১৯৪৯ সালে বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। 

শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বাস করতেন যে পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান দ্বারা শোষিত হচ্ছে, এবং বাঙালি জনগণকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ছয় দফা আন্দোলন পাকিস্তান সরকারের প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছিল, যা পাঞ্জাবি অভিজাতদের দ্বারা আধিপত্য ছিল।

 সরকার এই আন্দোলনকে পাকিস্তানের ঐক্যের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছিল এবং এটি বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন করে। অনেক লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, এবং কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছিল।

যাইহোক, ছয় দফা আন্দোলন বাঙালি জনগণের সমর্থন লাভ করেছিল, যারা বছরের পর বছর ধরে বৈষম্য ও শোষণের মুখোমুখি হয়েছিল। 

আন্দোলনটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনও অর্জন করেছিল, যারা বাঙালি জনগণের দাবির বৈধতা স্বীকার করেছিল।

ছয় দফা আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট। এটি বাঙালি জনগণকে তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং এটি অবশেষে ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার দিকে পরিচালিত করেছিল। 

আন্দোলনটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত্তি স্থাপন করে এবং মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি তার অঙ্গীকারের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।

পরিশেষে বলা যায়, ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি এমন একটি আন্দোলন যা বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি করে এবং এটি দেশের স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। 

ছয় দফা আন্দোলন ছিল বাঙালি জনগণের সাহস ও সংকল্পের প্রমাণ, যারা স্থিতাবস্থা মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল এবং তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছিল।

আমাদের কথা 

তো এই ছিল, ৬ দফা গুলো কি কি নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি। আশা করি, যারা গুগলে সার্চ করে ছয় দফা মনে রাখার কৌশল কি জানতে এই আর্টিকেলটি পড়তে এসেছেন তারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। কারণ বঙ্গটিউটর.কম ৬ দফা গুলো কি কি নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলটি অনেক অনলাইন রিসার্চ ও বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে নির্ভুল ও সঠিকভাবে লিখেছে। আর আমরা সব সময় চেষ্টা করি আমাদের সম্মানিত পাঠকদের নিকট নির্ভুল ও সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে। ধন্যবাদ ৬ দফা গুলো কি কি | ছয় দফা মনে রাখার কৌশল নিয়ে লেখা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য।

Tags:

  • ছয় দফা
  • ছয় দফা কর্মসূচি
  • ছয় দফা আন্দোলন
  • ছয় দফা দাবি সমূহ কি কি
  • ছয় দফার দ্বিতীয় দফা কি
  • ছয় দফা আন্দোলন গুলো কি কি
  • ছয় দফা দাবি সমূহ কি কি সংক্ষেপে
  • ছয় দফার প্রথম দফা কি
  • আওয়ামী লীগের ৬ দফা
  • ৬ দফা আন্দোলন
  • ৬ দফা
  • ছয় দফার দ্বিতীয় দফা কি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url