এমিস্টার টপ এর কাজ কি [উপকারিতা, ব্যবহারের নিয়ম ও দাম]


এমিস্টার টপ এর কাজ কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত
এমিস্টার টপ এর কাজ কি তা বিস্তারিত জানতে চাইলে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন। এমিস্টার টপ সিনজেনটা কোম্পানির একটি অধিক পরিচিত ওষুধ যেটি ফসলের কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেকেই এমিস্টার টপ এর কাজ ও প্রয়োগবিধি জানতে চাচ্ছেন। তাদের উদ্দেশ্যই এই পোস্ট লেখা। এটি গ্রাম বাংলার কৃষকের কাছে সেরা একটি কীটনাশক। ধান ও বেগুন ফসলে এর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়।

এমিস্টার টপ কীটনাশক এর কাজ ও প্রয়োগ কি

এমিস্টার টপ ধানের মাজরা পোকা দমনে অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়া এটি ধানের ব্লাস্ট রোগ, খোলপোড়া রোক এবং লক্ষীর গু রোগের জন্য প্রয়োগ করা যায়। ধানের ব্লাস্ট রো হলে ধানের পাতার মাঝখানে সাদা কিংবা হলুদ রং ধারণ করে।

সহজ ভাষায় বললে, ধানের পাতা মাঝখানে মাঝখানে পুড়ে যায়। শুধু পাতা নয় ধানের শীষও এরকম হতে পারে। ধানের পাতায় যদি মরিচার মতো দাগ পড়ে তাহলে এই কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন।

এই রোগগুলি দমন করার জন্য এমিস্টার টপ ৩২৫ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি করে মিশিয়ে স্প্রে করার মাধ্যমে উক্তরোগগুলো দমন করা যায়। 

পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও আপনাকে একই নিয়মে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে ফসলের উপর। অর্থাৎ প্রতি লিটার পানিতে এক মিলি করে এই কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। 

এছাড়া আম লিচুর এনথ্রাকনোজ রোগ হলে এটি প্রয়োগ করা যায়। এ ক্ষেত্রেও প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি করে  কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। পেঁয়াজের পার্পল ব্লচ দমনেও এটি ব্যবহার করা যায়। এছাড়া এটি বেগুন সবজির ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারবেন। এই রোগ হলে সাধারণত গাছের পাতা ও ফল কিংবা সবজি কুঁচকে যায় এবং পচন শুরু করে দেয়।

এছাড়া কুমড়া জাতীয় সবজির পাউডারি মিলডিউ রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। গাছ ও গাছের পাতা সাদা পাউডারের মতো হলে তাহলে বুঝতে হবে পাউডারি মিলডিউ রোগ হয়েছে। তখন আপনি এটি পানির সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে পারবেন। এক্ষেত্রেও একই মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

এমিস্টার টপ কীটনাশক প্রায় সকল প্রকার ফসল ও সবজিতে ব্যবহার করা হয়। যেকোনো সবজির ঢলে পড়া, পচা কিংবা আগামরা রোগ থেকে রেহাই পেতে এটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে প্রয়োগ মাত্রা একজন কীটনাশক বিশেষজ্ঞের নিকট থেকে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

এ ধরনের ওষুধ ভুল মাত্রায় প্রয়োগ করলেন ক্ষেতের সব ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি গাছ মারা যেতে পারে। যদিও এটি নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে অনেক মরা গাছ প্রাণ ফিরে পায়।

এমিস্টার টপ ব্যবহার করলে ধান চকচকে ও সুন্দর হয়। এক কথায় বলতে গেলে এটি আসলে সকল প্রকার ছত্রাক জাতীয় রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। মজার বিষয় হলো এটি উপকারী পোকামাকড়ের কোন ক্ষতি করে না।

এমিস্টার টপ এর মূল্য কত

এমিস্টার টপ ৩২৫ এসসি এর মূল্য পরিবর্তনশীল। এটি আপনাকে নিকটস্থ কীটনাশকের দোকান থেকে জেনে নিতে হবে। তবে বর্তমানে এর আনুমানিক মূল্য হবে ১০৫ টাকার মতো। অবশ্যই সঠিক মূল্য জেনে ক্রয় করতে ভুলবেন না। তবে হ্যাঁ, কেনার আগে অবশ্যই এমিস্টার টপ এর কাজ কি তা পড়ে নিবেন।

পরিশিষ্ট

এমিস্টার টপ এর উপকারিতা অনেক যেগুলো উপরে আলোচনা করা হয়েছে। তবে এটি ব্যবহার করার পূর্বে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এটি সংবেদনশীল ছত্রাকনাশক। ভুল প্রয়োগে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই সঠিক নিয়ম জেনে এবং নিজের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফসলের ক্ষেতে প্রয়োগ করবেন। এটি বিষ তাই মাস্ক পরিধান করে প্রয়োগ করবেন। আশা করছি, এমিস্টার টপ এর কাজ কি তা ভালোভাবে মনোযোগ দির্যন্ত পড়েছেন।
Next Post Previous Post