বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ ওষুধের নাম [নিয়ম ও দাম]

শিশুদের পাতলা পায়খানার ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত
শিশুদের পেটে সাধারণত জীবাণু ঢুকলে পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে অভিভাবকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। এটা চিন্তিত হওয়ার বিষয়েও বটে। ছোটদের পাতলা পায়খানা হলে পানিশূন্যতা হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করা প্রয়োজন। 

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার কারণ

নিম্নে কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ উল্লেখ করা হলো যেগুলো শিশুদের পাতলা পায়খানার জন্য দায়ী:
  • বাচ্চাদের পেটে জীবাণুর সংক্রমণ হলে।
  • শিশুদের পেটে গ্যাস হলে।
  • ফুড পয়জনিং হলে।
  • নরোভাইরাস ভাইরাসের সংক্রমণ হলে।
  • কিছু ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলে।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার লক্ষণ

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানা হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। যার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া।
  • পিপাসা লাগা।
  • চোখ শুকনো লাগা কিংবা খচখচ করা।
  • মাথা ঘুরানো।
  • মাথা ঝিমঝিম করা।
  • হালকা জ্বর আসতে পারে।
  • শ্বাস প্রশ্বাস বৃদ্ধি পাওয়া।
  • হার্টবিট বৃদ্ধি পাওয়া।
  • কান্নার সময় চোখ দিয়ে পানি না আসা।
  • মাথার তালু বসে যাওয়া।
  • শিশু ঝিমিয়ে পড়া ইত্যাদি।

বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার ওষুধের নাম

জিংক সিরাপ

সেবনবিধি: ১০ কেজি নিচের ওজনের শিশুদের জন্য দৈনিক এক চামচ করে দুইবার খাওয়াতে হবে। ১০ থেকে ৩০ কেজি ওজনের শিশুদের জন্য প্রতিবার দুই চামচ করে দৈনিক দুই থেকে তিনবার খাওয়াতে হবে। এটি খাবার গ্রহণের এক ঘন্টা পূর্বে অথবা খাবার গ্রহণের দুই ঘন্টা পরে খাওয়াতে হয়।

মূল্য: এটি এস কে এফ ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানির একটি ওষুধ। এটি বাজারে ১০০ মিলি ও ১৫০ মিলি সিরাপ আকারে পাওয়া যায়। যেগুলো ৫০ টাকা এবং ৭০ টাকা।

এ্যামোডিস সিরাপ

সেবনবিধি: এক থেকে তিন বছর বয়সে শিশুদের জন্য হাফ চা চামচ করে দিনে তিনবার খাওয়াতে হবে। চার থেকে ছয় বছর বয়সে শিশুদের এক চামচ করে দিনে তিনবার খাওয়াতে হবে। ৭ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের দেড় চা চামচ করে খাওয়াতে হবে দিনে তিনবার। খাওয়ার পর ভরা পেটে খেতে হবে। এই ওষুধ সাধারণত ৫ দিন পর্যন্ত খাওয়ানো যায়। পাশাপাশি আপনাকে ফুটন্ত ঠান্ডা পানি এবং খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে শিশুকে।

মূল্য: যেকোনো ফার্মেসি থেকে আপনি ৩৫ টাকা দিয়ে এই সিরাপ কিনতে পারবেন। এটি ৬০ মিলি সিরাপ আকারে পাওয়া যায়। এটি স্কয়ার কোম্পানির ঔষধ। এটির বিকল্প হল ফিলমেট সিরাপ যেটি একই গ্রুপের কিন্তু বেক্সিমকো কোম্পানির।

শিশুর পাতলা পায়খানার এন্টিবায়োটিক সিরাপ

সিপ্রোসিন ২৫০ সিরাপ (Ciprocin Syrup)

খাওয়ার নিয়ম: সিপ্রোসিন সিরাপ এন্টিবায়োটিক ওষুধ। এটি বাজারে সাসপেনশন আকারে পাওয়া যায়। এই সিরাপ এর প্যাকেটে দুটি বোতল রয়েছে। একটি বোতলে পানি আরেকটি বোতলে ঔষধ রয়েছে। ওষুধের বোতলটি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে যেটিতে পাউডার রয়েছে। এরপর পানি ও পাউডার মিশ্রণ করে ওষুধ তৈরি করতে হবে। এই ওষুধ দিনে দুইবার খাওয়াতে হবে সকালে এবং রাতে। এক থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের জন্য হাফ চা চামচ খাওয়াতে হবে। চার থেকে আট বছর বয়সী শিশুদের জন্য এক চা চামচ করে খাওয়াতে হবে। ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দেড় চা চামচ করে খাওয়াতে হবে। এক বছরের কম বয়সী শিশুদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এটি তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত খাওয়ানো যাবে।

দাম: ৬০ মিলি সিপ্রোসিন ২৫০ সিরাপ (সাসপেনশন) দাম মাত্র ১০০.০৩ টাকা।

আরো কিছু বাচ্চাদের পাতলা পায়খানার সিরাপ ঔষধের নাম দেওয়া হলো:

  • Filmet Syrup
  • জক্স সিরাপ
  • নাইটানিড সিরাপ - ৫০ টাকা

বাচ্চা শিশুদের পাতলা পায়খানা করণীয়

শিশুদের পাতলা পায়খানা হলে প্রচুর পরিমাণে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। এছাড়া তরল খাদ্য (চিড়ার পানি, ভাতের মাড়, ডাবের পানি) এবং পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়া চালিয়ে যাবেন। অল্প অল্প করে শিশুকে ঘন ঘন খাওয়াবেন। ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে বাচ্চার পাতলা পায়খানা বন্ধ না হলে অবশ্যই চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। শিশুর মলের সাথে রক্ত পড়লে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যেতে হবে।
Next Post Previous Post