মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত [ভিসার দাম]

মালয়েশিয়া কাজের বেতন সম্পর্কে বিস্তারিত
বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে চাকরি করতে যেতে চান তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ মালয়েশিয়া। তাই মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত এই বিষয়ে সবাই জানতে আগ্রহী থাকেন। মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি প্রবাসীরা বিভিন্ন বেতন স্কেলে চাকরি করে থাকেন।

মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত? 

শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে মালয়েশিয়া কাজের বেতন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত তা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে নিচে আলোচনা করা হলো:

মালয়েশিয়া ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কত? 

মালয়েশিয়াতে প্রকৌশলীরা সাধারণত ৬১৩০ মালয়েশিয়ান রিংগিত বা ১,৪৫,০০০ বাংলাদেশি টাকা মাসিক বেতন পান। এর মধ্যে আবাসন এবং পরিবহনের মতো সুবিধা রয়েছে। অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এই বেতন স্কেল পরিবর্তিত হতে পারে।সর্বসাকুল্যে একজন এন্ট্রি-লেভেল সফ্টওয়্যার প্রকৌশলী মাসিক প্রায় ৮৬০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত বা ২,০০,০০০ টাকা আয় করেন এবং একজন প্রধান সফ্টওয়্যার প্রকৌশলী নির্দিষ্ট ভূমিকায় প্রতি মাসে গড়ে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারেন। 

মালয়েশিয়া ডাক্তারের বেতন কত? 

মালয়েশিয়ায় পেশাদার এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের অনেক চাহিদা রয়েছে। এদেশে ডাক্তারদের মাসিক বেতনের পরিসর সাধারণত ৫৬৮০ মালয়েশিয়ান রিংগিত বা ১,৩৫,০০০ বাংলাদেশি টাকা থেকে ২৬, ১০০ রিংগিত বা ৬ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মালয়েশিয়া মার্কেটিং অফিসারের বেতন কত?

এই পেশার মধ্যে বেতন পরিসীমা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে সর্বনিম্ন উপার্জনকারীরা সাধারণত প্রতি মাসে প্রায় ৪৩৩০ রিংগিত বা ১ লক্ষ টাকা উপার্জন করে, যেখানে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীরা প্রতি মাসে প্রায় ৬৮৯০ রিংগিত বা ১,৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারে।

মালয়েশিয়া রাজমিস্ত্রীর বেতন কত?

মালয়েশিয়ায় কনস্ট্রাকশন লেবারদের মাসিক বেতন ৪০,০০০ থেকে ৪৫,০০০ টাকা হয়ে থাকে। তবে অভিজ্ঞতা ও চাকরির বয়সের ভিত্তিতে বেতন বাড়ার সুযোগ রয়েছে। একজন রাজমিস্ত্রী মালয়েশিয়ায় সর্বোচ্চ ৭০,০০০ - ৮০,০০০ পর্যন্ত বেতন পেতে পারে।

মালয়েশিয়া ইলেকট্রিক কাজের বেতন কত? 

মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে ইলেকট্রনিক কাজের চাহিদা রয়েছে। এই পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা শুরুতে মাসিক ৪৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে। তবে অভিজ্ঞতা ও চাকরির বেতন বাড়ার সাথে সাথে বেতন বাড়ার সুযোগ রয়েছে। একজন অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান মালয়েশিয়ায় ৮০,০০০ থেকে ১ লক্ষ টাকা মাসে আয় করতে পারে।

মালয়েশিয়া ড্রাইভারের বেতন কত?

অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ড্রাইভাররা মালয়েশিয়ায় বেশ ভালো বেতনে কাজ করে থাকে। ড্রাইভারদের বেতন সাধারনত ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি কাজের বেতন কত?

মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে নানান পদে প্রবাসীরা কাজ করে থাকে। এসব ফ্যাক্টরিতে পদ অনুযায়ী বেতন ৪০,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

মালয়েশিয়া পাম বাগানে কাজের বেতন কত?

মালয়েশিয়া হলো পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত পাম উৎপাদনকারী দেশ। এখানে পাম বাগানে কাজ করার জন্য প্রবাসীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। সাধারন কর্মীর মতো এসব কর্মীর বেতন স্কেল ৪৫,০০০ থেকে ৬০,০০০ এর মধ্যে হয়ে থাকে।অনেকে আবার চুক্তিভিত্তিক কাজ করে থাকেন।

মালয়েশিয়া কাজের সর্বনিম্ন বেতন কত? 

মালয়েশিয়ার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন কাজের বেতন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় মালয়েশিয়ায় সর্বনিম্ন যে বেতন প্রদান করা হয় তা হলো ১৫০০ রিংগিত বা প্রায় ৩৬,০০০ টাকা। মালয়েশিয়ার যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে এর চেয়ে কম বেতন প্রদান করা হয় না। 

মালয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি? 

মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন কাজে চাহিদা অনুযায়ী প্রবাসীদের নিয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে অল্পশিক্ষিত বা অশিক্ষিত লোকজনের মালয়েশিয়ায় যেসব কাজে নিয়োগ দেওয়া হয় তা হলো :
  • কৃষিকাজ
  • রাজমিস্ত্রী 
  • পাম বাগানের কর্মী 
  • ইলেকট্রনিক কর্মী
  • ক্লিনার বা পরিচ্ছন্নতা কর্মী 
  • ডেলিভারি ম্যান 
  • ড্রাইভার
  • ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার
এসব কাজে অভিজ্ঞতা থাকা সাপেক্ষে প্রচুর লোক নিয়োগ দিয়ে থাকে মালয়েশিয়া সরকার। এছাড়াও যোগ্যতা সম্পন্ন পেশাজীবিদেরও বিশেষ চাহিদা রয়েছে মালয়েশিয়ায়। যেমন :
  • ডাক্তার 
  • নার্স
  • ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার 
  • সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
  • সেলস অভিসার
  • মার্কেটিং অভিসার
  • আইনজীবি 
এসব পেশায় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা থাকা সাপেক্ষে অনেক ভালো বেতনে কাজ দিয়ে থাকে মালয়েশিয়া সরকার। 

মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসার দাম কত?

মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি, পাম বাগান, কোম্পানি, কিংবা ড্রাইভার সহ যেকোনো কাজের ভিসার পাস ফি ২০০ রিংগিত বা ৪৭০০ টাকা আর ভিসা প্রসেসিং ফি ২৫০০ টাকা। অর্থাৎ মালয়েশিয়া কাজের ভিসার দাম সর্বোমোট ৭২০০ টাকা। 

কাজের ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে? 

কাজের ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে খরচ একটু বেশি হয়। এমপ্লয়মেন্ট পাস ও ভিসা , ভিসা প্রসেসিং খরচ ইত্যাদি সহ ভিসার দাম ৭২০০ টাকা। ভিসার দাম এর সাথে বিমানের টিকেট প্রাইস, এজেন্সির সার্ভিস চার্জ, পাসপোর্ট, সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্স, স্মার্ট কার্ড, ডাটাবেজ রেজিষ্ট্রেশন, জামানত ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ সর্বমোট খরচ হয় ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। সরকারিভাবে কাজের ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে ৭৮৯৯০ টাকা খরচ হয়। 

মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসার দাম কত?

পড়াশোনার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া গেলে বছর প্রতি ৬০ রিংগিত বা ১৪০০ টাকা ভিসা পাস ফি প্রদান করতে হয়।সেই হিসেবে কোনো শিক্ষার্থী তিন বছরের কোর্সের জন্য মালয়েশিয়া যেতে চাইলে তার ভিসার দাম হবে ১৮০ রিংগিত বা ৪২০০ টাকা। 

স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে? 

স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে খরচ তুলনামূলক কম হয়। স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ নির্ধারণ করা হয় স্টুডেন্ট এর কোর্সের উপর নির্ভর করে। সাধারণত স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে ৯০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

মালয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিসার দাম কত? 

স্বল্প মেয়াদি মালয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিসা পাস ফি ৯০ রিংগিত বা প্রায় ২১০০ টাকা এবং ভিসা প্রসেসিং ফি প্রায় ১১০০ টাকা। সুতরাং মালয়েশিয়ার স্বল্পমেয়াদি ফ্যামিলি ভিসার দাম ৩২০০ টাকা। অপরদিকে মালয়েশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি ফ্যামিলি ভিসা পাস ফি ৬০০ রিংগিত বা প্রায় ১৪,০০০ টাকা এবং ভিসা প্রসেসিং ফি ১১০০ টাকা।অর্থাৎ মালয়েশিয়ার দীর্ঘ মেয়াদি ফ্যামিলি ভিসার দাম ১৫,১০০ টাকা। এই ভিসা এক বছরের বেশি সময়ের জন্য মালয়েশিয়ায় অবস্থানের জন্য প্রযোজ্য।

ফ্যামিলি ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে? 

ভ্রমন কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ফ্যামিলি ভিসায় মালয়েশিয়ায় যেতে হলে মাল্টিপল পাস ফি ৬০০ রিংগিত বা ১৪,০০০ টাকা সহ বিমানের টিকেট প্রাইস, এজেন্সির সার্ভিস চার্জ,সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্স, স্মার্ট কার্ড, ডাটাবেজ রেজিষ্ট্রেশন, জামানত ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ সর্বমোট খরচ ৫ লক্ষ থেকে ৭ লক্ষ টাকা (পরিবারের সদস্য অনুযায়ী) লাগে।

মালয়েশিয়া ভিজিট ভিসার দাম কত? 

মালয়েশিয়ায় ভ্রমনের উদ্দেশ্যে যেতে দুইটি ভিসার প্রয়োজন হয় ট্রানজিট ভিসা এবং এন্ট্রি ভিসা। যেকোনো দেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে বিমানবন্দরে ল্যান্ড করার ভিসা হিসেবে ট্রানজিট ভিসার প্রয়োজন হয়।মালয়েশিয়ার বিমানবন্দর থেকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য এন্ট্রি ভিসার প্রয়োজন পড়ে। উভয় ভিসার দাম ২০ রিংগিত করে ৪০ রিংগিত বা ১০০০ টাকা এবং ভিসা প্রসেসিং ফি ২৫০০ টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ২৬০০ টাকা জনপ্রতি। 

ভিজিট ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে?

ভিজিট ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে বিভিন্ন এজেন্সি নানা রকম প্যাকেজ দিয়ে থাকে। এসব প্যাকেজের আওতায় ভিসা ফি ২৬০০ টাকার সাথে এজেন্সির সার্ভিস চার্জ সহ যাবতীয় খরচ সহ একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ নির্ধারণ করে তাকে। এতে ভ্রমনের সময়ভিত্তিক বিভিন্ন প্যাকেজের মূল্য বিভিন্ন হয়। সাধারনত ট্রাভেল এজেন্সিরা বাংলাদেশ টু মালয়েশিয়া ট্রাভেলে ৫০ হাজার থেকে ১, ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত প্যাকেজ মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন। অর্থাৎ টুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে ৫০, ০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা লাগে।

মালয়েশিয়া মেডিকেল ভিসার দাম কত? 

মালয়েশিয়ায় ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে যেতে মেডিকেল ভিসা প্রয়োজন হয়। ভিজিট ভিসার মতো এটিও একটি স্বল্পমেয়াদি ভিসা। মেডিকেল ভিসায় মালয়েশিয়া যেতেও ট্রানজিট ও এন্ট্রি ভিসা প্রয়োজন হয়।ট্রানজিট ভিসা ২০ রিংগিত ও এন্ট্রি ভিসা ২০ রিংগিত মোট ৪০ রিংগিত বা ১০০০ টাকা হয় জনপ্রতি ভিসা প্রাইস।তবে এর বাহিরে মালয়েশিয়ায় বাসস্থানের জন্য রেসিডেন্স পাস নিতে হয়। 

মেডিকেল ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে? 

মেডিকেল ভিসায় মালয়েশিয়া যেতে ভিসা ফি,রেসিডেন্স পাস,বিমানের টিকেট খরচ,পাসপোর্ট, ভ্যাট,ট্যাক্স এবং অন্যান্য খরচসহ ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা লাগে। 

মালয়েশিয়া ভিসা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: মালয়েশিয়ার মুদ্রার নাম কী?

উত্তর: রিংগিত। 

প্রশ্ন: মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন বেশি?

উত্তর: ফ্যাক্টরি কাজের।

প্রশ্ন: মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা বেতন কত?

উত্তর: ১৭০০ রিঙ্গিত থেকে ২৫০০ রিঙ্গিত।

প্রশ্ন: মালয়েশিয়া কোন ভিসা ভালো?

উত্তর: এম এম ২ এইচ ভিসা (এই ভিসা হল মালয়েশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভালো)।

প্রশ্ন: মালয়েশিয়ার রাজধানীর নাম কী?

উত্তর: কুয়ালালামপুর। 

প্রশ্ন: মালয়েশিয়ার ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?

উত্তর: ২৩.৫০ টাকা।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া বিমান ভাড়া কত?

উত্তর: ক্লাসভেদে ৩৬ থেকে ৯৫ হাজার টাকা। 

প্রশ্ন: মালয়েশিয়া কোম্পানি ভিসা বেতন কত?

উত্তর: আনুমানিক প্রায় ৪০ হাজার টাকা।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে কত সময় লাগে?

উত্তর: নন স্টপ ফ্লাইটে ৩ ঘন্টা ৫৫ মিনিট এবং ওয়ান স্টপ ফ্লাইটে ১০ ঘন্টা থেকে ১৫ ঘন্টা সময় লাগে।

প্রশ্ন: মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে?

উত্তর: বয়স অবশ্যই ১৮ বছর হতে হবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া দূরত্ব কত কিলোমিটার?

উত্তর: ৩,৭৪৮ কিলোমিটার।

প্রশ্ন: মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন বেশি?

উত্তর: ইলেকট্রিক্যাল কাজ।

Next Post Previous Post