আমাশয় রোগের এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম [খাওয়ার নিয়ম ও দাম]

আমাশয় রোগের এলোপ্যাথিক ঔষধ নিয়ে বিস্তারিত
আমাদের বাংলাদেশে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের পরে আমাশয়ের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। আমাশয় সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা বিদ্যমান রয়েছে। তারা মনে করে যে মলের সাথে মিউকাস তথা আম গেলেই আমাশয় রোগ হয়েছে! এই ধারণাটি একেবারে ভুল। 

এই রোগটি জীবাণুবাহিত রোগ। এটি সাধারণত পেটের পীড়া হিসেবে পরিচিত। কখনো কখনো মলের সাথে মিউকাস বা আম না গিয়ে রক্তও যেতে পারে। এজন্য উচিত হবে আমাশয় রোগের এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম ও খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে। তবে তার আগে কারণ ও লক্ষণ ভালো করে জানতে হবে। 

আমাশয় এর প্রকারভেদ

আমাশয় রোগটির ২টি প্রকার রয়েছে। সেগুলো হলো অ্যামিবাঘটিত আমাশয় এবং দণ্ড-ব্যাকটেরিয়াঘটিত (ব্যাসিলারি) আমাশয়। তবে এটিকে মানুষ কখনো কখনো রক্ত আমাশয়, সাদা আমাশয় এবং পুরাতন কিংবা দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে। তবে সকল ধরনের আমাশয়ের ওষুধ কিন্তু একই।

আমাশয় রোগের কারণ

পরজীবী অ্যামিবার সংক্রমণে যে আমাশয় হয় তাকে বলা হয় অ্যামিবিক আমাশয়। কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যেগুলোর সংক্রমণে ব্যাসিলারি আমাশয় হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ: সিগেলা, সালমোনেলা, অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি। ব্যাকটেরিয়ার কারণে আমাশয় রোগ হলে মলের সাথে সাধারণত মিউকাস বা আম থাকে না। সকল প্রকার আমাশায় রোগের জীবাণু আমাদের দেহে প্রবেশ করে দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে। এছাড়া মাছির মাধ্যমে এই রোগটি সকলের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ এরা সব সময় নোংরা জিনিসপত্রে বসে।

আমাশয় রোগের লক্ষণ

  • মোচড় দিয়ে পেটে ব্যথা হওয়া
  • ঘনঘন মলত্যাগের তাগিদ
  • মলের সঙ্গে মিউকাস বা আম যাওয়া
  • মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া
  • জ্বর হতে পারে
  • মলে হালকা দুর্গন্ধ থাকতে পারে

আমাশয় রোগের এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম

জক্স সিরাপ

জক্স সিরাপ খাওয়ার নিয়ম: জক্স সিরাপ ছোট ও বড় সবাই সেবন করতে পারবে। গর্ভাবস্থায় ও স্তনদানকালে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এটি সেবন করা যেতে পারে। এটি স্বনামধন্য ওষুধ কোম্পানি স্কয়ারের সিরাপ। যেটি আমাশয় ও পাতলা পায়খানার কাজ করে থাকে। এটি এক থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের একটা চামচ করে ১২ ঘন্টা পর পর তিনদিন খাওয়াতে হবে। এটি ৪ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের ২ চা চামচ করে ১২ ঘন্টা পর পর তিনদিন খাওয়াতে হবে। ১২ বছর এবং তার অধিক ব্যক্তিদের ৫ চা চামচ করে ১২ ঘন্টা পর পর তিনদিন সেবন করতে হবে।

দাম: জক্স ৩০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৪০ টাকা মাত্র।

ফ্লাজিল ৪০০ ট্যাবলেট 

খাওয়ার নিয়ম: ফ্লাজিল সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি কোম্পানির একটি মেডিসিন। ট্যাবলেটের পাশাপাশি এটি বাজারে সিরাপ আকারেও পাওয়া যায়। এটি সাধারণত সাত দিন সেবন করতে হয়। প্রতিদিন দুইটি করে ট্যাবলেট খেতে হবে। সকালে এবং রাতে খাওয়ার পর ভরা পেটে একটি করে ট্যাবলেট খেতে হবে। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ মত। খুব বেশি প্রয়োজন হলে এটি গর্ভাবস্থায় ও স্তনদানকালে সেবন করা উচিত।

দাম: ফ্লাজিল ৪০০ ট্যাবলেট এর মূল্য ১.৭০ টাকা।

এছাড়া আরো কিছু কার্যকরী আমাশয় রোগের এলোপ্যাথিক ঔষধের নাম হলো:

  • Bacilex Tablet
  • Pivicil Tablet
  • Flagyl 400 mg Tablet
  • Alexid Tablet
  • Emcil Tablet
  • Lexipen 200 Tablet
  • Pivcilin Tablet
  • Relexid Tablet
  • Pinam Tablet

আমাশয় রোগীর কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত

  • বিশুদ্ধ ঠাণ্ডা পানি
  • আঙ্গুর 
  • চর্বিহীন মাংস যেমন: মুরগি 
  • দই 
  • মুরগির ঝোল 
  • ওটমিল
  • বীট 
  • গাজর 
  • টিনজাত ফল
  • পাকা কলা 
  • আলু ভর্তা 
  • চিনির সরবত
  • ফলের রস
  • ডালিম
  • সাদা ভাত
  • আপেল 
  • কমলা 
  • মাশরুম
  • লেবুর রস
Next Post Previous Post