বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম | সেবনবিধি | পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া | দাম


বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত
আপনি কি বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। বাচ্চাদের সর্দি-জ্বর এবং কাশি একটি অতি সাধারণ সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের সময় এই সমস্যাগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এতে ভয় পেয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই। তবে আবার অবহেলাও করা যাবে না। শিশুদের সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাই এই সমস্যাগুলো সব সময় লেগেই থাকে। মায়েরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। যাইহোক এই রোগে শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে।

বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি এবং কাশির কারণ

জ্বর:

  • ক্যান্সার
  • আকস্মিক ভয় পেলে 
  • ডেঙ্গু
  • ম্যালেরিয়া
  • টাইফয়েড
  • ফাঙ্গাস ইনফেকশন
  • টিকা নিলে
  • ফোঁড়া বা টিউমার হলে
  • ঠাণ্ডা লাগা
  • ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
  • ভাইরাস সংক্রমণ

সর্দি:

  • ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
  • ভাইরাস সংক্রমণ

কাশি:

  • ভাইরাস সংক্রমণ
  • ফ্লু, ঠান্ডা এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সংক্রমণের
  • ফুসফুসের ক্যানসার
  • বায়ুদূষণ
  • হাঁপানি
  • অ্যালার্জি
  • নিউমোনিয়া
  • যক্ষ্মা
  • সাইনোসাইটিস

বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি এবং কাশির উপসর্গ

  • মাথা ব্যথা
  • কানে ও মুখে চাপ অনুভব করা
  • স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসা
  • সর্দি থাকা
  • হাঁচি
  • জ্বর
  • নাক বন্ধ হওয়া
  • কাশি
  • গলা ব্যাথা
  • মাংসপেশীতে ব্যথা

বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম

নাপা সিরাপ (সর্দি-জ্বর হলে)

খাওয়ানোর নিয়ম: নাপা বাংলাদেশের স্বনামধন্য ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড কোম্পানির একটি ওষুধ। এটি বাজারে ট্যাবলেট ও সিরাপ আকারে পাওয়া যায়। তবে শিশুদের জন্য সিরাপ সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। এটি বাচ্চাদের সর্দি জ্বর হলে খাওয়াতে পারেন। ৩ মাসের কম বয়সী শিশুদের প্রতিবার ১০ মি.গ্রা করে দিনে তিন থেকে চারবার খাওয়াতে হবে। জন্ডিস থাকলে ৫ মি.গ্রা করে খাওয়াতে হবে। ৩ মাসের বেশি এবং ১২ মাসের কম বয়সে শিশুদের প্রতিবার হাফ চা চামচ থেকে এক চা চামচ করে দিনে তিন থেকে চারবার খাওয়াতে হবে। ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিবার এক থেকে দুই চা চামচ করে দৈনিক তিন থেকে চারবার খাওয়াতে হবে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের ২ থেকে ৪ দৈনিক তিন থেকে চার বার খাওয়াতে হবে। একমাত্র চিকিৎসক সঠিক ডোজ নির্ধারণ করে দিতে পারবে বয়স ও ওজনের ভিত্তিতে।

দাম: নাপা ৬০ মিলি সিরাপের মূল্য ৩৫ টাকা এবং ১০০ মিলি সিরাপের মূল্য ৫০ টাকা।


এছাড়া আরো কিছু প্যারাসিটামল গ্রুপের বাচ্চাদের জ্বরের ওষুধের নাম নিচে দেয়া হলো:
  • Fast Syrup (Acme)
  • Ace Syrup (Square)

পেডিয়ামিন সিরাপ (সর্দি-কাশি হলে)

খাওয়ানোর নিয়ম: পেডিয়ামিন বাংলাদেশের স্বনামধন্য ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানির একটি সিরাপ ওষুধ। যেটির জেনেরিক নাম হল Diphenhydramine Hydrochloride । নবজাতক শিশু এবং বাচ্চাদের সাধারণ সর্দি কাশি হলে এটি খাওয়াতে পারেন। ৩ থেকে ৬ মাস বয়সী শিশুদের আধা (১/২) চা চামচ করে দৈনিক দুইবার খাওয়াতে হবে। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য আধা (১/২) চা চামচ করে দৈনিক তিনবার খাওয়াতে হবে। ৬ বছর থেকে ২০ বছর বয়সী শিশুদের এক চা চামচ করে দৈনিক তিন থেকে চারবার খাওয়াতে হবে। অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: পেডিয়ামিন সিরাপ সেবনে বাচ্চাদের মধ্যে কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে:
  • ধড়ফড়
  • ঠান্ডা লাগা
  • বিভ্রান্তি
  • মাথা ঘোরা
  • তন্দ্রা
  • উচ্ছ্বাস
  • উত্তেজনা
  • ক্লান্তি
  • মাথাব্যথা
  • অনিদ্রা
  • বিরক্তি
  • নার্ভাসনেস
  • অস্থিরতা
  • অবসাদ
  • খিঁচুনি
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • ডায়রিয়া
দাম: পেডিয়ামিন ১০০ মিলি সিরাপ এর মূল্য ৪৫ টাকা।

এছাড়া আরো কিছু বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম নিচে দেওয়া হলো:
  • তুশকা প্লাস
  • এডোভাস
  • নেকটার
  • মধুভাস
  • রেমোকফ
  • বোক্সল
  • ওকফ
  • এমব্রক্স

বাচ্চাদের জ্বর, সর্দি এবং কাশি হলে করণীয়

  • বাচ্চাদের খোলামেলা এবং আলো বাতাস পূর্ণ আবহাওয়ায় রাখতে হবে।
  • অতিরিক্ত কাপড় চোপড় পরিয়ে রাখা যাবে না।
  • আক্রান্ত শিশুকে এ সময় স্কুলে পাঠানো যাবে না।
  • তরল জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়াতে হয়। নবজাতক হলে মায়ের বুকের দুধ বেশি বেশি পান করাতে হবে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
  • অবশ্যই বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশির ঔষধের নাম জেনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সিরাপ ঔষধ সেবন করাতে হবে।
  • পরিস্থিতি জটিল হলে নিকটস্থ চিকিৎসক কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
  • বাড়ির সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। কারণ এটি পরবর্তীতে শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে দিবে।
Next Post Previous Post